করোনা ভেরিয়্যান্টের বিস্তৃতিতে বিরোধী দল সমালোচনামুখর

টরন্টো, এপ্রিল ২২: গতকাল বুধবার করোনা মহামারি প্রতিরোধে জাতীয় নেতৃত্বের প্রশ্নে গ্রীন, এনডিপি ও কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা বিভিন্ন প্রদেশে জীবাণুর ভেরিয়্যান্ট ঊর্ধ্বগামী হওয়ায় ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

এতে হাউজ অব কমন্সে অনুষ্ঠিত এক বিতর্কে গ্রীন পার্টির সাবেক প্রধান এমপি এলিজাবেথ মে বলেছেন, ‘সামগ্রিকভাবে একটি দেশের প্রেক্ষাপটে কানাডিয়ানরা যা চায় অথবা যা কানাডিয়ানদের প্রাপ্য, তা আমরা পরিপূরণ করছি না। এখানে আমরা যারা দেশের জনগণের সেবায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা রয়েছি, যারা সেবায় ব্রতী হওয়া দরকার, তারা আমরা যা বলে বেড়াচ্ছি তা করছি না।’

ইতিমধ্যে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১১ লাখ ৩৯ হাজার সংক্রমিতদের মাঝে ৭০ হাজার ৩০০ জনই হচ্ছেন ভেরিয়্যান্ট আক্রান্ত। যুক্তরাজ্যে বি১১৭ প্রথম চিহ্নিত হওয়ার পর, সেই জীবাণুতেই ওই আক্রান্তদের ৯৬ শতাংশ কানাডার বেশ কিছু প্রদেশ, যেমন- ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, আলবার্টা, অন্টারিও ও ক্যুইবেকে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। ফলে এই জীবাণুর দ্রুত বিস্তৃতি, যা তীব্র ছোঁয়াচে ও মরণঘাতী, তাতে সেটির পুর্নজাগৃতিতে মানুষ হাসপাতালে ভর্তি থেকে মৃত্যুবরণ করছে এবং সেটি কেবলই অন্য প্রদেশে ছড়াচ্ছে।

এমপি এলিজাবেথ মে’র পাশাপাশি তার দলের অপর এমপি পল ম্যানলি কানাডার সার্বিক করোনা পরিস্থিতিকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও তাইয়ানের সঙ্গে তুলনা করেন, যেখানে এই দেশগুলোতে সংক্রমণ ও মৃত্যুহার সর্বনি¤েœ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। সেজন্য তিনি সুনির্দিষ্টভাবে এই দেশ সমূহের অভিজ্ঞতালব্ধ নেতৃত্ব, সীমান্ত বন্ধ, অন্তরণ প্রক্রিয়া, দেশের ভেতর বিচরণ, ব্যাপক পরীক্ষণ ও সনাক্তকরণ এবং অপরিহার্য লকডাউন ব্যবস্থার দৃষ্টান্তগুলো তুলে ধরেন। 

ফলশ্রুতিতে এনডিপি এমপি ডন ডেভিস প্রদেশ সমূহের উপর ফেডারেল সরকারের প্রভূত নেতৃত্ব ছেড়ে দেবার ক্ষেত্রে সমালোচনামুখর হন। তিনি বলেন, অন্টারিও প্রদেশের ‘কাহিল’ অবস্থার কারণে ফেডারেল সরকারের সার্বিক সহযোগিতার স্বার্থে জরুরি আইন বলবৎ করা উচিত, যা প্রধানমন্ত্রীকে প্রদেশ বা অঞ্চলের জরুরি ও সঙ্গীন অবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার ক্ষেত্রে একান্ত এখতিয়ার দিতে সক্ষম।

পাশাপাশি কনজারভেটিভ এমপি জন বারলো লিবারেল সরকারের টিকাকরণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে তার দলের সমালোচনাপূর্ণ অবস্থান পুর্নব্যক্ত করে বলেন, ‘মৌলিক চাহিদার মতো নিরাপত্তাটি পরিপূরণে অসমর্থ্য ফেডারেল সরকারের কারণে কেবল করোনা মহামারিতে নয় বরং মানসিক যাতনায় এলাকাবাসী মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন।’

তথাপি এ সকল সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্যাটি হাজডু বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশের মতোই অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাটি ধরে রাখতে যথেষ্ট ধকল পোহাতে হয়েছে।’ তিনি খোলাসা করে বলেন, আমাদের জাতীয় টিকাকরণ প্রক্রিয়াটি ফলোৎপাদক হয়েছে এবং ইতিমধ্যে গতকাল বুধবার পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৭ লাখ ১৯ হাজার ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে।