পেশকৃত বাজেটকে ‘সুযোগ হাতছাড়া’ বলছে কোঅপারেশন কানাডা

টরন্টো, এপ্রিল ২১: কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবিক কর্মতৎপরতায় প্রচারমুখী সংস্থা, কোঅপারেশন কানাডা সংখ্যালঘু লিবারেল সরকার কর্তৃক পেশকৃত বাজেটকে ‘রাজনৈতিক দূরদর্শীতাহীন সুযোগ হাতছাড়া’ বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং সেটিকে করোনাত্তোর বিশ্বে ‘দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যপূরণে অর্থহীন’ বলেছে।

গত সোমবার গেল দুই বছরের মাঝে অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড ১০১.৪ বিলিয়ন ডলারের ব্যয় সমৃদ্ধ বাজেটটির মোড়ক উন্মোচন করেছেন। ৭৩৯ পৃষ্টার ওই বাজেট অঙ্গীকারে বলা হয়েছে যে, আগামী পাঁচ বছরে ‘উন্নয়নশীল দেশে ও ঝুঁকির মুখোমুখিতে থাকা মানবিক সংকটে আবর্তিত জনগোষ্ঠির জন্য’ সর্বাধিক ১.৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হবে। এই সঙ্গে তাতে মহামারী সংকট মোকাবেলার জন্য ৩৭৫ মিলিয়ন ডলার থাকছে।

পাশাপাশি ওই বাজেটে বিশ্বের সংকট নিরসন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও অপরাপর সমস্যা সমাধানে ২০২১-২২ অর্থ বছরে আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্য হিসেবে পররাষ্ট্র বিষয়ক গ্লোবাল অ্যাফিয়ার্স কানাডাকে ১৬৫ মিলিয়ন ডলার দেয়া হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ২০২১-২২ সাল থেকে তিন বছর মেয়াদে ২৮৮.৩ মিলিয়ন ডলার দেবে। আর ওই সময়কাল থেকে পরবর্তী দুই বছর মেয়াদে ভেনিজুয়েলার অভিবাসী ও উদ্বাস্তু সমস্যা নিরসনে ৮.৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

কিন্তু কোঅপারেশন কানাডার প্রধান নির্বাহী নিকোলাস ময়য়ার বলছেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের শিখিয়েছে কী করে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়। তাই কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবিক কর্মতৎপরতায় প্রচারমুখী সংস্থা সরকারের প্রতি কৌশলী এবং একই সময়ে সর্বত্র বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। আর তাই ওই বাজেটটি সে প্রয়োজন নিবারনে যথোপযুক্ত হয়নি।’

তাই কোঅপারেশন কানাডা বলেছে, ঐতিহাসিকভাবে অনগ্রসরমান দেশসমূহের কন্যা ও নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে অতিমাত্রায় নিপতিত। তাদের নিরাপত্তায় সংকল্পবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। সেজন্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পরিমন্ডল থেকে সরকারের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ব্যয়-বরাদ্দের ১ শতাংশ বৈশ্বিক উদ্ধার কার্যক্রম হিসেবে বিনিয়োগের দাবি তোলা হয়েছে। তাই চলতি বাজেটে পাঁচ বছর মেয়াদে ১.৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয়-বরাদ্দের পরিপ্রেক্ষিতে মহামারী সংকট মোকাবেলার জন্য ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের অংকটি বর্ধিতকরণের তাগিদটি রয়েছে। সেই বর্ধিতকরণ স্মরণাতীতভাবে এক প্রজন্মে দীর্ঘমেয়াদে করোনা থেকে উত্তরণ ও ভবিষ্যতের সমস্যা নিরসনে বিশ্বের স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেই প্রয়োজন।

সেজন্যই পরিসমাপ্তিতে আহ্বান রেখে বলা হয়েছে, ‘এ বছর শেষে জি৭ শীর্ষ বৈঠক ও প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে কানাডার ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বৈশ্বিক উন্নয়নে প্রত্যেকের প্রত্যাশায় প্রগতিশীল ও নীতিগত বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনাটি রয়েছে। কেননা এটি অর্থপূর্ণ ও কার্যকরভাবে সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, বৈষম্যহীন ও টেকসইপূর্ণ সমাজ গড়ারই সময়।’