২০২১ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ‘প্রকৃত সাংবাদিকতা’ ১৩০টির বেশি দেশে অবরুদ্ধ

টরন্টো, মে ৩: ২০২১ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক, যা প্যারিসভিত্তিক রিপোটার্স উইদআউট বর্ডার্স (আরএসএফ) ১৮০টি দেশের মুক্ত গণমাধ্যমের আলোকে প্রণয়ন করে থাকে, তারা দেখিয়েছে অবস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ক্ষেত্রে যেখানে সাংবাদিকতা প্রতিষেধকতুল্য, তা ১৩০টি দেশে পুরোপুরি কিংবা আংশিক অবরুদ্ধ।

এই দেশগুলো মুক্ত গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে ‘অতি মন্দ’, ‘মন্দ’ ও ‘সমস্যাসংকুল’ হিসেবে এবং কালো ও লাল অথবা কমলা রংয়ে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম মানচিত্রে প্রদর্শিত। একই সঙ্গে ওই সূচকের উপাত্তে মানুষের তথ্য প্রাপ্তির সহজলভ্যতা ও সংবাদ পরিবেশন যে নাটকীয়ভাবে বাধাগ্রস্থ সেটিও প্রতিফলিত। এতে করোনাভাইরাসকে অজুহাত দেখিয়ে সাংবাদিকদের তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে।

সেজন্য আরএসএফ মহাসচিব ক্রিস্টাফি ডিলোয়ের বলেন, ‘অবস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ক্ষেত্রে যেখানে সাংবাদিকতা প্রতিষেধকতুল্য। দুঃখজনকভাবে তা রচনা ও পরিবেশন সচরাচর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কারিগরি এমনকী সাংস্কৃতিক কারণেও অবগুন্ঠিত। আর তাই অবস্তুনিষ্ঠ তথ্য যা সীমান্ত পেরিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কিংবা সামাজিক মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে থাকে, তা কেবল যাচাই-বাছাই করে সাধারণের মাঝে সাংবাদিকতাই তুলে ধরতে সক্ষম।’

এতে ইউরোপ ও আমেরিকার (উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ) মুক্ত গণমাধ্যম তুলনামূলকভাবে পছন্দনীয় অবস্থানে থাকলেও সূচকের উপাত্ত অনুসারে আমেরিকা মহাদেশদ্বয়ে সংঘটিত আঞ্চলিক লংঘন ২.৫ শতাংশের উপরে। ইউরোপেও উল্লেখযোগ্য ‘অপব্যবহার বা অমর্যাদা’ পরিলক্ষিত, সেখানে বিশ্ব প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বালকানে ১৭ শতাংশের মতো অধঃগতি ঘটেছে।

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘সেন্সরশীপ ভাইরাস’ বা নিষেধাজ্ঞাজনিত সংক্রমণ চীনের বাইরেও বিস্তৃত। তাতে সুনির্দিষ্টভাবে হংকং (৮০তম), যেখানে বেইজিং আরোপিত জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক নিষেধাজ্ঞার খড়গ সাংবাদিকতার জন্য আতঙ্কপূর্ণ।

পাশাপাশি আঞ্চলিক বিবেচনায় পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া (ইইসিএ) শেষের উপরিভাগে অবস্থান করছে, কেননা সেজন্য কিছুটা বেলারুশের (১৫৮ সারিতে নিচ থেকে ৫ম) ঘটনাবলী দায়ী, যেখানে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে রাস্তার বিক্ষোভে সাংবাদিকরা নির্বিচার আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছেন।

একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (এমইএনএ)-এর পরিস্থিতি তথৈবচ, যার অবস্থান আঞ্চলিক বিবেচনায় সবার নিচে অবস্থান করছে।

এতে সামগ্রিকভাবে আরএসএফ’র বৈশ্বিক সূচকে ২০২১ সালটি পূর্ববর্তী ২০২০ সালের তুলনায় ০.৩ শতাংশ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু তাই বলে গত বছরের পরিস্থিতিকে তুলনামূলক বিবেচনায় কোনো স্থিতিশীল অবস্থা হিসেবে গণ্য করার উপায় হতে পারে না, কারণ তা ২০১৩ সালে প্রণীত সূচককাল থেকে ১২ শতাংশ অধঃগতিতে নিপতিত হয়েছে।