বঙ্গবন্ধুকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার দিয়েছে ভারত

মোহাম্মদ আলী বোখারী, সিএনএমএনজি নিউজ

টরন্টো, মার্চ ২২: বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ২০২০ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই পুরস্কার ঘোষণা করে। এতে প্রতীয়মান যে, মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করে দেশটির সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উত্তরণে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে এই পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের ঠিক আগে বঙ্গবন্ধুর এই সম্মাননা পাওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা তাতে দুই দেশের সম্পর্কের উত্তরোত্তর উন্নতির দিকটিও প্রতিভাত।

গান্ধী শান্তি পুরস্কারের বিচারকমন্ডলীর প্রধান হচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এছাড়ও বিচারকমন্ডলীর অপর সদস্যরা হলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে, লোকসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং সুলভ ইন্টারন্যাশনাল সামাজিক সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা বিন্ধ্যেশ্বর পাঠক। গত শুক্রবার বৈঠকে বিচারকমন্ডলী ২০২০ সালের পাশাপাশি ২০১৯ সালের পুরস্কার প্রাপ্তদের নামও অনুমোদন দেন। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের পুরস্কারটি পেয়েছেন ওমানের প্রয়াত সুলতান বিন সায়েদ আল সায়েদ।

এই পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি রুপি। পাশাপাশি রয়েছে মানপত্র ও ঐতিহ্যপূর্ণ হস্তশিল্প সামগ্রী। আর এই পুরস্কার ১৯৯৫ সাল থেকে চালু করা হয়েছে।

অতীতে গান্ধী শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন তানজানিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ার, জার্মানির ড. গারহার্ড ফিসার, ভারতের রামকৃষ্ণ মিশন ও বাবা শ্রী মুরলিধর দেবিদাস আমতে, শ্রী চান্দি প্রাসাদ ভাট ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা ও আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংক।

এছাড়াও সাম্প্রতিককালে অর্থাৎ ২০১৫ সালে ভারতের বিবেকানন্দ কেন্দ্র, ২০১৬ সালে যৌথভাবে অক্ষয় পত্র ফাউন্ডেশন ও সুলভ ইন্টারন্যাশনাল, ২০১৭ সালে ইকাল অভয়ণ ট্রাস্ট এবং ২০১৮ সালে জাপানের উহি সাসাকাওয়া পেয়েছেন এই পুরস্কার।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে এক টুইটে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব ভারতীয়র কাছে এক আদর্শ ব্যক্তিত্ব। ভারতীয়দের কাছেও তিনি বীর। তিনি ছিলেন মানবাধিকার ও স্বাধীনতার রক্ষক।

এবার গান্ধী শান্তি পুরস্কার ঘোষণাকালে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণ করে বলা হয়েছে, স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত গড়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। দেশকে তিনি স্থিতিশীল করেছেন। তাঁর আদর্শেই গড়ে উঠেছে ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্কের ভিত। সৃষ্টি হয়েছে উপমহাদেশে শান্তি ও অহিংসার বাতাবরণ।