বিশেষজ্ঞের মতে, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো করোনা টিকা ফি বছর নিতে হবে মোহাম্মদ আলী বোখারী, সিএনএমএনজি নিউজ

Click on image to see it enlarged

টরন্টো, এপ্রিল ৫: করোনা ভেরিয়্যান্ট নিয়ে কানাডায় যে দ্রুত উপশম টিম গড়ে উঠেছে অর্থাৎ ‘করোনাভাইরাস ভেরিয়্যান্টস র‌্যাপিড রেসপন্স নেটওয়ার্ক’-এর দায়িত্বে নিয়োজিত অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাণুবিদ মার্ক-আন্দ্রে ল্যাংলোয়িস জানিয়েছেন, ‘রূপান্তরিত জীবাণু বহুকাল থাকবে এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো করোনা টিকা ফি বছর নিতে হবে।’ গত ৩ এপ্রিল সিবিসি সম্প্রচারিত ‘দ্য হাউজ’ অনুষ্ঠানে তিনি সে কথা জানান। তার কথা, ‘এটা প্রাদুর্ভাব হিসেবে দেখা দিলেও যেমনটা প্রতি বছর আমরা ফ্লু শট গ্রহণ করি, তেমনটা সে সময়ে রূপান্তরিত জীবাণুর টিকাটি নিতে হবে।’

বর্তমানে এই জীবাণুবিদ সারা কানাডার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তার ওই টিমটি গঠন করেছেন এবং তাদের সম্মিলিত কাজটি হচ্ছে, করোনা জীবাণু রূপান্তরের পেছনে কী ধরণের বৈজ্ঞানিক কারণ জড়িত এবং তা প্রতিরোধ কী করে সম্ভব, সেটাই খুঁজে বের করা। আশার কথা, প্রায় ৩০ জন বিশেষজ্ঞ ওই টিমে রয়েছেন, যারা কানাডা সরকারকে উত্তর দিতে তৈরি হচ্ছেন।

মার্ক-আন্দ্রে ল্যাংলোয়িস তার টিম সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘তারা দেখতে চাচ্ছেন তুলনামূলক বিবেচনায় কোন টিকায় রূপান্তরিত বিশেষ জীবাণুটি প্রতিরোধ সম্ভব, যাতে ওই ভ্যাকসিনের সরবরাহটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে নিশ্চিত করা সম্ভব হয় এবং অপরটি অন্যত্র। কেননা তাতে জীবাণূ রূপান্তরগত সম্পর্কটি অঙ্গীভূত।’

বর্তমানে কানাডায় এই বছর জুড়ে বিদ্যমান করোনা মহামারীর তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রদেশে লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ও অন্টারিও প্রদেশ জুড়ে এবং ক্যুইবেকের তিনটি শহরে লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। কেননা সেখানকার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা শয্যাগুলো রোগির ভিড়ে দ্রুত পূরণ হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন পুরো পরিবার রোগাক্রান্ত হয়ে ভিড় করছেন, যা আগের দুটো ঢেউয়ে দেখা যায়নি।

এ সম্পর্কে এক টুইটে স্কারবরো হেলথ্ নেটওয়ার্কের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. লিসা সালামন বলেন, ‘এই সপ্তাহান্তে জরুরি বিভাগে একজন রোগিকে দেখেছি। তার এক সন্তানের ইন ল’ আরেক হাসপাতালে রয়েছে। বলা যাচ্ছে না তারা কী করে আক্রান্ত হয়েছে। এক পরিবারের তিন পরিবার আক্রান্ত। সব মিলে ১০ জন। এ রকমটি আমি দেখিনি।’

দেখা যাচ্ছে, কেবল অনেকেই শুধু সংক্রামিত হচ্ছে এমনটা নয়, বরং ভেরিয়্যান্টের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এছাড়া আগের সংক্রমণের ঢেউয়ের তুলনায় চিকিৎসকরা তরুণদের আক্রান্তের তথ্য দিচ্ছেন, যেখানে প্রকট ধরণের উপসর্গ বিদ্যমান।

এতে ডা. সালামনের ভাষ্য, ‘মানুষ জড়ো হওয়ার ক্ষেত্রে যতটা বিধি মেনে চলবে, ততটা সহজে আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো।’

সেজন্য চাই যত বেশি মানুষ যতটা দ্রুত ভ্যাকসিন নেবে, সেটাই মার্ক-আন্দ্রে ল্যাংলোয়িস জানিয়েছেন। কারণ তার মতে, কানাডায় বিদ্যমান তিনটি ভ্যাকসিন ভেরিয়্যান্টের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তবে আরও নতুন ভেরিয়্যান্ট আবর্তিত হবে। অবশ্য তার টিম কানাডায় অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে, কী করে দুটো ভেরিয়্যান্টের একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনাটি রয়েছে। ‘এছাড়া জীবাণুটি বিভাজনে নতুন করে রূপান্তরিত হচ্ছে। হয়তো এমনও হতে পারে, যে ভ্যাকসিনগুলো এখন প্রচলিত, তাতে পরিবর্তন আনতে হবে।’